তিলের খাজার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে রংপুরের গঙ্গাচড়ার নুর ইসলাম

তিলের খাজার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে রংপুরের গঙ্গাচড়ার নুর ইসলাম

মারুফা জামান, গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি:

তিলের খাজার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে রংপুরের গঙ্গাচড়ার নুুুর ইসলাম। উপজেলার গজঘন্টা ইউনিয়নের জয়দেব (মধ্যপাড়া) গ্রামে তার বাড়ি। তিনি গত ৩০ বছর ধরে খাজা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তার বাবা আবুল কাশেম ও দাদা শহিদার রহমান এ পেশার সঙ্গেই জড়িত ছিলেন। ‘খাজা লাগবে খাজা। গরম গরম খাজা। তেলের খাজা খাইতে মজা। বুড়া খাইলে বুড়ি তাজা কিংবা চেংরা খাইলে চেংরি তাজা’ সাত সকালে এমন করে ডাক দিয়ে যাওয়া সেই পরিচিত ডাকটি আজও মনে পড়ে।

শীতের দিনে খাজার মজাই আলাদা। ছেলেবেলার বাবা-মায়ের কাছে আবদার কিংবা চুরি করে ধান দিয়ে গোপনে খাজা খাওয়ার স্বাদই যেন আলাদা, এসব কথা কিংবা ‘তেলের খাজা খাইতে মজা’ এমন কথা আজও শোনা যায়। কানে ভাসে। হাট-বাজার কিংবা বিভিন্ন সভা সেমিনারে খুঁজে পাওয়া যায় তেলের খাজা। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের জয়দেব (মধ্যপাড়া) এমনি একটি গ্রাম যেখানে প্রায় সবাই এই তেলের খাজা বিক্রির সঙ্গে জড়িত। গ্রামের প্রায় ৪০টি পরিবার এই পেশার সঙ্গে জড়িত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। যুগ যুগ ধরে বাপ-দাদার আদি পেশাকে আকড়ে ধরে আজও ঘানি টানছে এ শিল্পের। সমাজে বিভিন্ন পেশার মানুষ।

নুর ইসলামের মতো ওই গ্রামের আমজাদ, এফতার, আফজাল, আকতার, সুলতান, আনারুল এরা সবাই এ পেশার সঙ্গে জড়িত। পুরুষের পাশাপাশি মহিলারা তাদের স্বামীকে সাহায্য সহযোগীতা করে থাকে এ কাজে। স্বল্প মুলধনের মাধ্যমে তাদের বেঁচে থাকার এ সংগ্রাম।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল হলেই প্রতিটি বাড়িতে তাদের আয়োজন শুরু হয়। কেউবা চিনি কিংবা গুড়ে জ্বাল দিচ্ছে। এভাবে তৈরি করে মন্ড। কেউবা মেঝেতে চিনি কিংবা গুড়ের মন্ড কাগজে ঢোলছে। কেউবা করছে টানাটানি। কেউবা দিচ্ছে তিলের ছিটা। এভাবেই চলে তাদের ব্যস্ততা। খাজা তৈরি হলেই পুরুষরা বের হয়ে পড়ে। কোথায় আছে সভা সমাবেশ কিংবা ওয়াজ মাহফিল এসব তাদের আগে থেকেই জানা থাকে। 

আপনি আরও পড়তে পারেন